রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪, ০৪:১৬ অপরাহ্ন

উপ-সম্পাদক :: দিদার সরদার
প্রধান সম্পাদক :: সমীর কুমার চাকলাদার
প্রকাশক ও সম্পাদক :: কাজী মোঃ জাহাঙ্গীর
যুগ্ম সম্পাদক :: মাসুদ রানা
সহ-সম্পাদক :: এস.এম জুলফিকার
প্রধান নির্বাহী সম্পাদক :: মামুন তালুকদার
নির্বাহী সম্পাদক :: সাইফুল ইসলাম
ব্যবস্থাপনা সম্পাদক :: আবুল কালাম আজাদ
সংবাদ শিরোনাম :
দুই দিনের সফরে আজ বরিশাল আসছেন অতিথি গ্রুপ অব কোম্পানির এমডি লায়ন সাইফুল ইসলাম সোহেল  পিরোজপুর ভান্ডারিয়ার যুব মহিলা লীগ নেত্রী জুথি গ্রেফতার গৌরনদীতে তিন দফা দাবি আদায়ে ছাত্রদলের বিক্ষোভ মিছিল উপজেলা প্রশাসনকে ১৫ দিনের আল্টিমেটাম গ্রেনেড হামলার মামলা থেকে তারেক রহমানসহ বিএনপি নেতারা খালাস পাওয়ায় গৌরনদীতে আনন্দ মিছিল বরিশালের বাকেরগঞ্জসহ চারটি থানা এবং উপজেলায় নাগরিক কমিটি গঠন   আওয়ামী লীগ ও শেখ হাসিনা বিহীন বাংলাদেশ শান্তিতে থাকবে, এটা অনেকেরই ভালো লাগেনা-এম. জহির উদ্দিন স্বপন তারেক রহমানের বিজ্ঞ নেতৃত্বের কারণে শেখ হাসিনাকে পালিয়ে যেতে বাধ্য করেছি-এম. জহির উদ্দিন স্বপন গৌরনদীতে দৈনিক যুগান্তরের বিরুদ্ধে বিড়ি শ্রমিক ও ব্যবসায়ীদের প্রতিবাদ ও বিক্ষোভ মিছিল দুষ্টামিটাও ছিল যেমন স্পর্শকাতর, খেসারাতটাও দিতে হল তেমনি ভয়ঙ্কর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক দলের ৫ সদস্যের বরিশাল মহানগরে আহ্বায়ক কমিটি গঠন
ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তর শুরু আজ

ভাসানচরে রোহিঙ্গা স্থানান্তর শুরু আজ

অনেক বিতর্কের পর কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে আশ্রয় নেওয়া রোহিঙ্গাদের একটি দল ভাসানচর যাচ্ছে। সবকিছু ঠিক থাকলে ৫০০ রোহিঙ্গার একটি দল আজ বৃহস্পতিবার ভাসানচরের উদ্দেশে রওনা হবে। স্বেচ্ছায় যারা যেতে আগ্রহ প্রকাশ করেছে তাদের পাঠানোর মাধ্যমেই এ স্থানান্তর প্রক্রিয়া শুরু হচ্ছে।
কক্সবাজারের উখিয়া-টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্প থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যেতে উখিয়া কলেজ মাঠে অস্থায়ী ট্রানজিট পয়েন্ট স্থাপন করা হয়েছে। মাঠে একাধিক কাপড়ের প্যান্ডেল ও বুথ তৈরি করা হয়েছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে দায়িত্বপ্রাপ্ত প্রশাসনের কেউ মুখ খুলতে না চাইলেও রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নিয়ে যাওয়ার ব্যাপক আয়োজন চোখে পড়ার মতো।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, আজ ভোরে
উখিয়া কলেজ মাঠ থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে স্থানান্তর শুরু হতে পারে। এজন্য প্রয়োজনীয় পরিবহন ব্যবস্থা ও খাদ্যসামগ্রী মজুত করা হয়েছে। এর আগে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর কার্যক্রম ঘিরে বঙ্গোপসাগরের এই দ্বীপ ঘুরে আসে ২২টি এনজিওর প্রতিনিধি দল। ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক রোহিঙ্গাদের জন্য সেখানে মজুত করা হয়েছে ৬৬ টন খাদ্যসামগ্রী।
ক্যাম্প-২০ এর হেডমাঝি মোহাম্মদ হোছন বলেন, ক্যাম্প-২০ এবং ২০ এক্সটেনশন থেকে ৮টি রোহিঙ্গা পরিবার ভাসানচরে যাওয়ার জন্য তালিকাভুক্ত হয়েছে। ক্যাম্প-১৭ এর হেডমাঝি মোহাম্মদ নুর বলেন, তার ক্যাম্প থেকে ৭০ পরিবারের নাম দেওয়া হলেও ৯টি পরিবার ভাসানচরে যাওয়ার জন্য রাজি হয়েছে। ক্যাম্প-৫ এর হেডমাঝি জাফর আলম বলেন, এ ক্যাম্প থেকে ৫টি রোহিঙ্গা পরিবার ভাসানচরে যেতে ইচ্ছুক।
এদিকে শেষ পর্যন্ত ১ লাখ রোহিঙ্গা ভাসানচর যাচ্ছে- এমন খবরে উখিয়া-টেকনাফের সাধারণ মানুষ স্বস্তি প্রকাশ করছেন। রোহিঙ্গাদের ভাসানচর নেওয়ার আগে ২২টি এনজিওর প্রতিনিধিরা ভাসানচর পরিদর্শন করে সরকারের পরিকল্পিত আয়োজনে সন্তোষ প্রকাশ করেন। রোহিঙ্গাদের ভাসানচর নেওয়ার বিষয়ে সহযোগিতার আশ্বাস দেন তারা।
এদিকে কক্সবাজার থেকে চট্টগ্রামে নিয়ে সেখান থেকে রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেওয়ার জন্য প্রস্তুত রাখা হয়েছে নৌবাহিনীর ১৪টি জাহাজ। প্রথম দুই মাস তাদের রান্না করা খাবার সরবরাহ করা হবে। এরপর নিজ নিজ বাসস্থানেই তারা রান্না করতে পারবেন।
সম্প্রতি দ্বীপটি ঘুরে দেখে গেছে পালস বাংলাদেশ সোসাইটি, কুয়েত সোসাইটি ফর রিলিফ, ফ্রেন্ডশিপ, এসএডব্লিউবি, শারজাহ চ্যারিটি ইন্টারন্যাশনাল : বাংলাদেশ, গ্লোবাল উন্নয়ন সংস্থা, আল মানাহিল ওয়েলফেয়ার, সনি ইন্টারন্যাশনাল, আলহাজ শামসুল হক ফাউন্ডেশন, হেলথ দ্য নিডি চ্যারিটেবল ট্রাস্ট, জনসভা কেন্দ্র, কারিতাস বাংলাদেশ, সমাজকল্যাণ উন্নয়ন সংস্থা (স্কাস), সোশ্যাল এইড, সিডিডি, মুক্তি- কক্সবাজার, ভলান্টারি অরগানাইজেশন ফর সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট, আর টি এম ইন্টারন্যাশনাল, মাল্টি সার্ভ ইন্টারন্যাশনাল, আল্লামা ফয়জুল্লাহ ফাউন্ডেশন, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্র ও হেলথ অ্যান্ড এডুকেশন ফর অল। এসব এনজিও সেখানে কাজও শুরু করেছে।
সূত্র জানায়, উখিয়া ও টেকনাফের পাহাড়ে ঠাসাঠাসির বসবাস ছেড়ে ভাসানচরে যেতে তিন হাজারেরও বেশি রোহিঙ্গা রাজি হয়েছে। তবে চার থেকে পাঁচ হাজার রোহিঙ্গা আগ্রহ প্রকাশ করেছে বলে গণমাধ্যমে জানিয়েছেন শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াত।
নোয়াখালীর হাতিয়ায় সাগরের মাঝে ভেসে থাকা ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের জন্য সব ধরনের সুযোগ সুবিধা সংবলিত ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। ঝড় জলোচ্ছ্বাস থেকে সুরক্ষায় বিশেষ ব্যবস্থাও রয়েছে। বসবাসের যে ব্যবস্থা করা হয়েছে তা দেখতে গত সেপ্টেম্বরে দুই নারীসহ ৪০ রোহিঙ্গা নেতাকে সেখানে নিয়ে যায় সরকার। তারা ভাসানচরের আবাসন ব্যবস্থা দেখে মুগ্ধ হয়। তারা ক্যাম্পে ফিরে অন্যদের ভাসানচরে যেতে উদ্বুদ্ধ করে। দুবছর আগে সরকার ভাসানচরে এক লাখ রোহিঙ্গাকে স্থানান্তরের সিদ্ধান্ত নিয়েছিল। কিন্তু তাদের অনিচ্ছার কারণে তা সম্ভব হচ্ছিল না।
ভাসানচরে যেতে আগ্রহী রোহিঙ্গাদের অনেকে জানান, তারা ভাসানচর পরিদর্শন শেষে ফিরে আসা রোহিঙ্গা নেতাদের মুখে সেখানকার বর্ণনা শুনে বসবাস করতে যেতে রাজি হয়েছেন। তাদের মতে পাহাড়ের ঘিঞ্জি বস্তিতে বসবাসের চেয়ে ভাসানচর অনেক নিরাপদ হবে। এ ছাড়া ভাসানচরে রোহিঙ্গাদের বসবাসের জন্য নির্মিত অবকাঠামো অনেক বেশি আধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত মনে হয়েছে রোহিঙ্গাদের।
কোনো বলপ্রয়োগ ছাড়াই রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে যাওয়ার ইতিবাচক মনোভাব দেখে তাদের সেখানে পাঠানোর বিষয়ে কার্যকর পদক্ষেপ নেয় সরকার। রোহিঙ্গাদের প্রথম দলটিকে নিরাপদে ভাসানচরে পাঠাতে পারলে আরও অনেক পরিবার সেখানে যেতে আগ্রহী হবে বলে সরকার আশাবাদী।
জাতিসংঘের বিবৃতি
কক্সবাজারের ক্যাম্প থেকে ভাসানচরে যাওয়ার ক্ষেত্রে রোহিঙ্গারা যেন সব তথ্য জেনে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারে, তা নিশ্চিত করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে জাতিসংঘ। গতকাল বুধবার সংস্থাটি এক বিবৃতিতে বলেছে, রোহিঙ্গাদের ভাসানচরে নেওয়ার যে পরিকল্পনা সরকার চূড়ান্ত করেছে, তার সঙ্গে জাতিসংঘের কোনো ধরনের সম্পৃক্ততা নেই। এ স্থানান্তর প্রক্রিয়ার প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রমে বা রোহিঙ্গাদের শনাক্ত করার প্রক্রিয়ায় জাতিসংঘকে সম্পৃক্ত করা হয়নি। স্থানান্তরের সার্বিক কর্মকা- সম্পর্কে জাতিসংঘের কাছে পর্যাপ্ত তথ্য নেই।
বিবৃতিতে বলা হয়, স্থানান্তরের বিষয়ে রোহিঙ্গারা যেন প্রাসঙ্গিক, নির্ভুল ও হালনাগাদ তথ্যের ওপর ভিত্তি করে স্বাধীনভাবে সিদ্ধান্ত নিতে পারেন, তা নিশ্চিত করতে জাতিসংঘ বরাবরই আহ্বান জানিয়ে এসেছে। বর্তমান পরিস্থিতিতেও জাতিসংঘ এ বিষয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করছে। ইতোপূর্বে বাংলাদেশ সরকার জানিয়েছে, ওই দ্বীপে রোহিঙ্গাদের স্থানান্তর হবে স্বেচ্ছামূলক। জাতিসংঘ এ গুরুত্বপূর্ণ প্রতিশ্রুতির প্রতি সম্মান প্রদর্শনের জন্য সরকারকে আহ্বান জানাচ্ছে। ভাসানচরে স্থানান্তরিত রোহিঙ্গাদের শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা এবং জীবিকার নিশ্চয়তা বিধানের পাশাপাশি দ্বীপ থেকে মূল ভূখ-ে চলাচলের স্বাধীনতা দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে বিবৃতিতে।
স্থানান্তর ঘিরে আলোচনার প্রস্তাব দিয়ে জাতিসংঘ বলছে, বাংলাদেশ সরকার ভাসানচর প্রকল্পের ঘোষণা দেওয়ার পর থেকে এ পরিকল্পনা সম্পর্কে সম্যক ধারণা সৃষ্টির লক্ষ্যে এবং গুরুত্বপূর্ণ নীতিগত, পদ্ধতিগত ও বাস্তবায়ন সম্পর্কিত বিষয়গুলো বিবেচনার জন্য গঠনমূলক আলোচনার প্রস্তাব রেখেছে জাতিসংঘ। এ আলোচনা চালিয়ে যেতে জাতিসংঘ এখনো আগ্রহী। ভাসানচরে স্থানান্তর বিষয়ে আগে থেকে টেকনিক্যাল প্রোটেকশন অ্যাসেসমেন্ট করার প্রস্তাবও দিয়ে আসছে জাতিসংঘ।
সে প্রসঙ্গে বিবৃতিতে বলা হয়, জাতিসংঘের এই নিরপেক্ষ মূল্যায়নে শরণার্থীদের বাসস্থান হিসেবে ভাসানচরের নিরাপত্তা, প্রায়োগিক সম্ভাব্যতা, স্থায়িত্ব এবং শরণার্থীদের সুরক্ষা কাঠামো, তাদের সহায়তা ও সেবা গ্রহণের অবকাঠামোর সার্বিক পর্যালোচনা করা হবে। সরকারের অনুমোদন সাপেক্ষে জাতিসংঘ প্রায়োগিক ও সুরক্ষাবিষয়ক মূল্যায়ন করার জন্য প্রস্তুত রয়েছে। জাতিসংঘ সরকারের ভাসানচর প্রকল্প বাস্তবায়নে নিয়োজিত হতে পারবে কিনা, সেটা নির্ধারণে এ মূল্যায়নগুলো সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ হিসেবে বিবেচিত হবে।
সরকারের নিজস্ব অর্থায়নে দুহাজার ৩১২ কোটি টাকা ব্যয়ে ১৩ হাজার একর আয়তনের ভাসানচরে ১২০টি গুচ্ছগ্রামের অবকাঠামো তৈরি করে এক লাখের বেশি মানুষের বসবাসের ব্যবস্থা করা হয়েছে। মালয়েশিয়া যেতে ব্যর্থ হয়ে ফিরে আসা তিন শতাধিক রোহিঙ্গাকে সমুদ্র থেকে উদ্ধার করে ইতোমধ্যে ভাসানচরে নিয়ে রাখা হয়েছে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..



Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *




© All rights reserved © 2017 Dokhinerkhobor.Com
Desing & Developed BY ThemesBazar.Com